শহর জুড়ে লাগানো পোষ্টার |
ফরিদপুরে এক আওয়ামী লীগ নেতা ও এক ছাত্রলীগ নেতার নামে চাঁদাবাজীর অভিযোগে মামলা হয়েছে। গত রবিবার রাতে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় এ মামলা দুটি করেন যথাক্রমে শহর যুবলীগের সভাপতি শহরের বদরপুর এলাকার বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও শহরের লক্ষ্মীপুর মহল্লার বাসিন্দা ঠিকাদার সালেহ আহমেদ। অন্যদিকে এই দুই নেতার গ্রেফতার ও তাদের ব্যাংক এ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার দাবীতে শহর জুড়ে পোষ্টার লাগানো হয়েছে।
সাজ্জাদ হোসেন জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক মোকাররম মিয়া বাবুর বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা চাঁদাবাজীর অভিযোগে মামলা করেন সাজ্জাদ হোসেন বরকত। এজাহারে বলা হয়, ফরিদপুর সরকারি তিতুমীর বাজারের নির্মাণ কাজ পাইয়ে দেওয়া জন্য মোকাররম তার কাছে ৪০ লাখ টাকা চাঁদা চান। তিনি ২০ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন। বাকি ২০ লাখ টাকার জন্য মোকাকররম মিয়া তাকে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিল।
ঠিকাদার সালেহ আহমেদ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর সাবেক সহকারি একান্ত সচিব (রাজনৈতিক) সত্যজিৎ মুখার্জীর বিরুদ্ধে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার চাঁদাবাজীর অভিযোগে মামলা করেছেন। এজাহারে বলা হয় বিভিন্ন ঠিকাদারী কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য সত্যজিৎ তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তিনি বাধ্য হয়ে তাকে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়েছেন।
সাজ্জাদ হোসেন জানান, তিনি তিতুমীর বাজারে এসে মোকাররমকে চাঁদা হিসেবে ২০ লাখ টাকা দিয়েছেন। সালেহ আহমেদ বলেন, সত্যজিৎ আমার চেম্বারে এসে এটাকাগুলি নিয়েছিল।
‘এ অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই’-দাবি করে সত্যজিৎ মুখার্জী বলেন, সালেহ আহমেদ নামে কাউকে আমি চিনি না। জীবনে ঠিকাদারীর ধারে কাছেও যাইনি। আমি ঠিকাদারী বুঝি না। তবে মোকাররম মিয়ার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় অভিযোগের বিষয়ে তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
চাঁদাবাজীর অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও জেলা ছাত্রলীগ নেতার নামে মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহসীনুল হক বলেন, আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য ২০০৯ সালে ফরিদপুর সদর আসনের সাংসদ খন্দকার মোশাররফ হোসেন মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করার পর সত্যজিৎকে এপিএস নিযোগ করেন। বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে গত ১৬ এপ্রিল তাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। মন্ত্রী হওয়ার পর ফরিদপুরে মন্ত্রীর হয়ে সবকাজের তদারকি করতেন মোকাররম। কিন্তু মন্ত্রী ও তার ভাই ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার মোহতেশাম হোসেন সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য সম্বলিত দুটি ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পরায় গত ১৩ এপ্রিল মোকাররমকে তদারকি করার সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন মন্ত্রী। এরই ছয় দিনের মধ্যে মামলাদায়েরের এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে মঙ্গলবার ফরিদপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ওই দুই বির্তকিত নেতার নামে বিভিন্ন সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজীর অভিযোগ এনে তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে প্রচারে ফরিদপুরবাসী লিখে হাজার হাজার পোষ্টার লাগানো হয়েছে।
ফরিদপুর,২১ এপ্রিল, ২০১৫।
No comments:
Post a Comment