নিউজটুডেফরিদপুরঃ
এক শিক্ষককে চাকরীতে পনুর্বহাল ও অপর এক শিক্ষককে অপসারণেসহ বিভিন্ন দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ফরিদপুরের একমাত্র বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ‘টাইমস ইউনিভার্সিটি’র শিক্ষার্থীরা।
রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুর প্রেসকাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুরাইয়া আক্তার মিষ্টি।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মমিনুল ইসলামকে চাকুরিতে বহাল এবং বিবিএ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শরিফুল ইসলামকে অপসারণের দাবি জানানো হয়। শিক্ষার্থীরা প্রধান এ দাবির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে শ্রেণি কক্ষ-লাইব্রেরি ও ল্যাবে পর্যাপ্ত কম্পিউটার, বই ও চেয়ার টেবিল না থাকা, ডামি কোর্ট না থাকা, ইউজিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ম কানুন না মানা, জনপ্রিয় শিক্ষকদের খেয়াল খুশী মত বরখাস্ত করা, সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন, শিক্ষার্থীদের দাবিকে অবমূল্যায়ন করা, মান সম্মত শিক্ষার পরিবেশ না থাকার কথা তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মমিনুল ইসলামকে চাকুরিতে বহাল এবং বিবিএ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শরিফুল ইসলামকে অপসারণের দাবিতে গত ১৯ এপ্রিল থেকে আমার পরীক্ষা ও কাস বর্জন করে আন্দোলন করছি। ২৫ এপ্রিল আমাদের সাথে চেয়ারম্যান কথা বলবেন বলে জানানো হয়। কিন্তু তিনি আসেন নি। পরে জানানো হয় ৩০ এপ্রিল তিনি আমাদের সাথে কথা বলবেন। কিন্তু আজও (গতকাল সোমবার) তিনি আসেননি। এখন আমাদের বলা হচ্ছে চেয়ারম্যান আগামী ৫ মে আমাদের সাথে কথা বলবেন। আমরা বুঝতে পারছি না তিনি (চেয়ারম্যান) এ কথাও রক্ষা করবেন কিনা।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, চার মাস আন্তর আমাদের সেমিস্টার। গত ১০দিন ধরে আমাদের কাস হচ্ছে না। এ পর্যায়ে আমরা সেমিস্টার হারানোর ঝুকিতে রয়েছি এবং আমাদের ভবিষতের কথা ভেবে শংকিত হয়ে পড়েছি।
শিক্ষার্থীরা জানান, চলমান বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কারনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি জাহানারা বেগম গত বছর এপ্রিলে চলে গেছেন। এর পরে আর নতুন কোন ভিসি নিয়োগ দেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীরা চলমান ঘটনা ও অব্যবস্থাপনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যানের অদক্ষতাকে দায়ি করে বলেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে যে কোন সময় এ বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে যাবে।
পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাতউজ্জামান, সোমাইয়া জাহান, মোস্তাকিম হাসান, মো. মোনায়েম, বিবিএ ও এমবিএর হাসিবুল হাসান, লিনা হাসান ও পার্থ সাহা।
প্রসঙ্গত এ দাবিতে গত ১৯ এপ্রিল পরীক্ষা ও কাস বর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান করে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা। তবে কর্তৃপক্ষ ২৫ এপ্রিল এ বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা সেদিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সন্তোষ কর্মকার গনমাধ্যমকর্মীদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে সমঝোতার মাধ্যমে আইন বিভাগের শিক্ষক মমিনুল ইসলাম চলে যান।
তবে মমিনুল ইসলাম জানান. আমাকে তাৎক্ষণিক ভাবে চাকুরি চ্যুত করা হয়েছে। গত ১৮ এপ্রিল আমি যখর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। ওই সময় বিবিএর শিক্ষক শরিফুল আমাকে ডেকে বলেন, ব্যবস্থাপনা কমিটি আপনাকে এ বিশ্ববিদ্যারয়ে আর চায় না। আপনাকে আজই স্যাক করা হয়েছে। পরে আমাকে চার মাসের অগ্রিম বেতন বুঝিয়ে দেওয়া হয়। রেজিস্ট্রারের ‘সমঝোতার মাধ্যমে চাকুরি ছেড়ে দেওয়ার দাবি’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার ক্ষেত্রে যা ঘটেছে তা যদি ওই বিশ্ববিদ্যারয়ে সমঝোতার ভিত্তিতে চাকুরি ছাড়া হয়, তাহলে আমার বলার কিছু নেই।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিবিএর বিভাগীয় প্রধান শরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমি তো আর বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক নই। মালিক যদি কোন সিদ্ধান্ত দেয় তবে আর তো কিছু কি করার থাকে না। এটা মালিকের সিদ্ধান্ত। তিনি মন্তব্য করেন ‘কিছু মানুষের প্ররোচনায় কিছু শিক্ষার্থী আন্দোলন করছে’।
টাইম ইউনির্ভাসিটির চেয়ারম্যান শরিফ আফজল হোসেন জানান, ওই শিক্ষক শারিরিক ভাবে অসুস্থ থাকায় ঠিকমত কাস নিতে পারছিলেন না। এর জন্য তাকে তার সম্মিতিতে চার মাসের বেতন অগ্রিম দিয়ে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যারা আন্দোলন করছে তারা স্থানীয় কিছু লোক ও কিছু শিক্ষকদের ইন্ধনে করছে। ‘শিক্ষার্থীদের বড় অংশ এর সাথে যুক্ত নয়’-দাবি করে তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, তিনি ৫ মে ফরিদপুরে গিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে সমস্যার সমাধান করবেন। #
No comments:
Post a Comment