মনিরুল ইসলাম টিটো, নিউজ টুডে ফরিদপুরঃ
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার রামনগন ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের এক স্কুলছাত্রীর যৌথ ছবি তুলে পরবর্তীতে ওই ছবিতে ফটোসপের কারসাজি করে নিজের ছবির সাথে জুরে দিয়ে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছে মাসুদ নামের এক বখাটে। এঘটনার প্রতিবাদ করায় ওই স্কুলছাত্রী ও তার মা এবং বাবাকে পিটিয়ে আহত করে বখাটে মাসুদ ও তার বাবা সামাদ ব্যাপারী। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে শালিশ বৈঠক হলেও তা প্রত্যাক্ষান করে উল্টো নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্রী ও তার পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছে বখাটে মাসুদ ও তার পরিবার। ভয়ে ও অর্থাভাবে হত দরিদ্র ওই স্কুল ছাত্রীর পরিবারটি থানায় অভিযোগ করারও সাহস পাচ্ছে না। অন্যদিকে ঘটনাটি জানতে বখাটে মাসুদের বাড়িতে গেলে গনমাধ্যম কর্মীদের উপর চড়াও হন মাসুদের পরিবারের সদস্যরা।
রামনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী শারমিন আক্তারকে ২ বছর যাবত উত্যাক্ত করতো স্থানীয় বখাটে মাসুদ ব্যাপারী। সম্প্রতি ওই বখাটে শারমিনকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে সম্পর্কে চাচা হওয়ায় প্রস্তাব প্রত্যাক্ষান করে শারমিন ও তার পরিবার। এ সময়ই বখাটে মাসুদ হুমকি দিয়েছিল শারমিনের জীবন নষ্ট করে দেয়ার। গত কয়েকদিন আগে পারিবারিক একটি ছবি থেকে শারমিনের ছবি নিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাসুদ তার ছবির সাথে জুরে দিয়ে অশ্লীলভাবে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। স্থানীয়রা ছবি দেখতে পেয়ে বিষয়টি শারমিনের পরিবারকে জানায়। শারমিনের বাবা মা বিষয়টির প্রতিবাদ করলে বখাটে মাসুদ ও তার বাবা সামাদ ব্যাপারী ওরফে কুটি ব্যাপারী শারমিনের বাবা মাকে পিটিয়ে গুরতর আহত করে গত ১৩ জুলাই। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। দিনমজুর ও হতদরিদ্র ওই পরিবারের মামলা করার ক্ষমতা না থাকায় স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যানের শালিসবৈঠকের আশ্বাসে চিকিৎসা গ্রহন শেষে বাড়ী ফিরে যান তারা। স্থানীয় মাতবরদের করা শালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত প্রত্যাক্ষান করে ওই বখাটে ও তার পরিবারের সদস্যরা স্কুলছাত্রীটির পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছে। ২৫ জুলাই শারমিনের স্কুল খুললেও ভয়ে বিদ্যালয়ে যায়নি সে। ক্রমাগত হুমকিতে শারমিন স্কুলে যাওয়া এবং বাড়ির বাইরে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
ঘটনাটি জানার পরে ফরিদপুরে কর্মরত কয়েকজন গনমাধ্যম কর্মী ঘটনাস্থলে গেলে বখাটে মাসুদের পরিবারের সদস্যরা চড়াও হয় সাংবাদিকদের উপরে। শারমিনের মা রওশানারা বেগম জানায়, এখন বাড়ী থেকে উচ্ছেদের হুমকী দিচ্ছে বখাটের পরিবার। অব্যাহত হুমকীতে মেয়েটি স্কুলে যেতে ভয় পচ্ছে বলে জানান শারমিনের মা। শারমিনের বাবা ইউসুফ ব্যাপারী জানান, আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় থানায় মামলা করতে যেতে পারছিনা। তিনি দাবী করনে, প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার মত ক্ষমতা নেই তার। স্থানীয়রা মনে করেন এঘটনায় হামলাকারীদের বিচার হওয়া দরকার। শালিস বৈঠকের মাতবর আফসার ব্যাপারী ও রামনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারশ্যান আব্দুল কুদ্দুস ফকির জানায়, গত ২৩ জুলাই এনিয়ে স্থাণীয় সাবেক চেয়ারম্যান আঃ কুদ্দুস ফকিরের নেতৃত্বে শালিস বৈঠক বসানো হলেও হামলাকারীরা শালিসবৈঠক অমান্য করে। তবে শালিশে তারা হামলা ও ইন্টারনেটে ছবি ছড়ানোর বিষয়টি স্বিকার করেছে বলে জানান শালিস প্রধান। শালিস প্রধান আরো জানান, ওই বখাটে যুবক ইতিপুর্বেও আরো অনেক মেয়ের ছবি ইন্টারনেটে ছেড়েছে। এদিকে বিয়টি জানার জন্যে সংবাদকর্মীরা হামলাকারী সামাদ ব্যপারীর মুখোমুখি হলে কোন সদুত্তর না দিয়ে তেড়ে আসের সংবাদকর্মীদের দিকে। আর বখাটে মাসুদ বের হয়নি ঘর থেকে। অপরদিকে নগরকান্দা থানার ওসি মোঃ আফসার উদ্দিন ঘটনাটি জানা নেই দাবী করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। #
নিউজ টুডে ফরিদপুর, ২৭ জুলাই, ২০১৫।
No comments:
Post a Comment